ভয়েস অফ গোপালগঞ্জ ডেস্ক,
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে এ বছর পাটচাষে দেখা দিয়েছে নতুন আশার আলো। ফলন ভালো, দামও সন্তোষজনক — ফলে মুখে হাসি ফিরেছে এলাকার কৃষকদের। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এখন পাট বিক্রির উৎসবমুখর পরিবেশ। কেউ পাট শুকিয়ে ঘরে তুলছেন, কেউ আবার গরুর গাড়িতে করে বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে যাচ্ছেন।
মুকসুদপুরের গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক আকুব্বর আলী জানান, এ বছর তিনি ৮ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। ফলন হয়েছে বিঘাপ্রতি ১২ থেকে ১৪ মণ। প্রতি মণ পাট বিক্রি করেছেন ৪ হাজার ২০০ টাকায়। সব খরচ বাদে আয় হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। তিনি বলেন,
“গত বছর ৫ বিঘা জমিতে পাট করেছিলাম, এবার ৮ বিঘা করেছি। আগামী বছর ১০ বিঘা চাষ করার পরিকল্পনা আছে।”
পাটকাঠিও বিক্রি করছেন ভালো দামে—প্রতি মণ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়।
একইভাবে উপজেলার পশারগাতী গ্রামের চাষি আলমাস মিয়া বলেন, তিন বিঘা জমিতে পাট চাষে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। উৎপাদন হয়েছে ৩৬ মণ, বিক্রি করেছেন মণপ্রতি ৪ হাজার ১০০ টাকায়। তিনি বলেন,
“পাটের দাম ভালো, তাই আগামী বছর আরও বেশি জমিতে চাষ করব।”
উপজেলার বিভিন্ন হাটে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার থেকে ৪ হাজার ৩০০ টাকায়। কৃষকরা জানাচ্ছেন, আগের বছরের তুলনায় এবার ফলন ও দাম দুটোই ভালো, ফলে তারা পাটচাষে আগ্রহী হচ্ছেন আগের চেয়ে বেশি।
কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, পাটচাষ কেবল অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক নয়, এটি পরিবেশবান্ধবও। পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাড়ানো গেলে পলিথিনের বিকল্প তৈরি হবে, যা পরিবেশ দূষণ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
পাটচাষিরা আশা করছেন, সরকার যদি পাটজাত পণ্যের ব্যবহার আরও বাড়ায় এবং পলিথিন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়, তবে পাটের চাহিদা আরও বৃদ্ধি পাবে। এতে কৃষক যেমন লাভবান হবে, তেমনি পরিবেশও সুরক্ষিত থাকবে।
মুকসুদপুরের কৃষকদের চোখে এখন নতুন সম্ভাবনার স্বপ্ন—
“পাটের সোনালি দিন আবার ফিরে আসছে।”