ভয়েস অফ গোপালগঞ্জ ডেস্ক,
বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের ইতিহাসে আজকের দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (২২ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কনভেনশনে বাংলাদেশের অনুসমর্থনপত্রে স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস, শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর ম্যাক্স টুনোনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
স্বাক্ষরিত কনভেনশনগুলো হলো—
১. পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিষয়ক কনভেনশন, ১৯৮১ (নং ১৫৫)
২. কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা উন্নয়ন কাঠামো কনভেনশন, ২০০৬ (নং ১৮৭)
৩. কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি প্রতিরোধবিষয়ক কনভেনশন, ২০১৯ (নং ১৯০)
এ তিনটির মধ্যে কনভেনশন ১৫৫ ও ১৮৭ আইএলওর মৌলিক কনভেনশন হিসেবে বিবেচিত।
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির স্মরণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন,
“রানা প্লাজার পর সরকার অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয়নি। আমরা বলেছি— ‘হচ্ছে হবে’ নয়, এখন ‘করতেই হবে’। আজ সেটিই বাস্তবে রূপ নিল।”
তিনি আরও বলেন,
“প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর শ্রম অধিকারের বিষয়টিকে আমি সর্বাগ্রে রেখেছি। এই কনভেনশনগুলোতে স্বাক্ষর করা মানে শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি শ্রমিক সুরক্ষার নতুন অধ্যায়। কাগজে সই করেই কাজ শেষ নয়, এখন শুরু হলো বাস্তবায়নের যাত্রা।”
শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন,
“আজ অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় আমরা শুরু থেকেই আন্তরিকভাবে কাজ করছি।”
প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেন,
“এই যাত্রা সহজ ছিল না, তবে এটি ছিল আনন্দদায়ক ও গৌরবের।”
আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর ম্যাক্স টুনোন বাংলাদেশের এই অর্জনের প্রশংসা করে বলেন,
“শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতে অন্তর্বর্তী সরকারের এ পদক্ষেপ ঐতিহাসিক। কনভেনশন বাস্তবায়নে আইএলও পূর্ণ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।”
তিনি আরও জানান, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি ‘লেবার চার্টার’ গ্রহণেরও প্রস্তাব দিয়েছেন আইএলও।
উল্লেখ্য, এ তিনটি কনভেনশন অনুস্বাক্ষরের মাধ্যমে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে আইএলওর ১০টি মৌলিক কনভেনশন অনুস্বাক্ষরকারী দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে।