শিক্ষা ডেস্ক,
শিক্ষকদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে দেশের সব এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকাল থেকে এ কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকরা। এর ফলে স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
শিক্ষকদের দাবি—বেতন-ভাতার ন্যায্য হিস্যা নির্ধারণ, ২০ শতাংশ বাড়ি ভাতা, চিকিৎসা ভাতা ও উৎসব ভাতা সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন দ্রুত জারি করা। রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এসব দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ, জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এতে অন্তত তিন শিক্ষক গুরুতর আহত হন এবং পাঁচজনকে আটক করা হয়।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন পিরোজপুরের গণপতি হাওলাদার (৩২), কিশোরগঞ্জের মো. শফিকুল ইসলাম কাজল (৪০) এবং চাঁদপুরের আক্কাস আলী (৫৫)। তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তারা হাসপাতাল ছেড়েছেন।
পুলিশি হামলার পর আন্দোলনরত শিক্ষকরা প্রেস ক্লাব এলাকা থেকে ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। একাংশ প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান অব্যাহত রাখলেও, অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজীজির নেতৃত্বে আরেকটি বড় অংশ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে অবস্থান নেন। সেখান থেকেই তিনি সোমবার থেকে সারাদেশে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।
অধ্যক্ষ আজীজি বলেন,
“শিক্ষকদের ওপর এ ন্যক্কারজনক হামলা আমরা মেনে নেব না। দাবি আদায় এবং হামলার প্রতিবাদে দেশের সব এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে।”
এদিকে কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, রংপুর, রাজশাহী, চাঁদপুর ও ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতির খবর পাওয়া গেছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাত কাটানো শিক্ষকরা সকালে আবারও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন। তারা জানিয়েছেন, সরকারের কাছ থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
এর আগে, রোববার সকালে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে কর্মকর্তারা আগামী ২২ অক্টোবরের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। তবে শিক্ষকরা জানান, “আশ্বাস নয়, আমরা প্রজ্ঞাপন চাই।” তাই তারা রাজপথে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।