লাইফস্টাইল ডেস্ক,
দিনের শুরুটা যেমন ব্যস্ততায়, শেষটাও তেমনি দৌড়ঝাঁপে ভরা। অফিস থেকে দেরিতে ফেরা, টিভি দেখা বা মোবাইলে সময় কাটাতে কাটাতে অনেকেরই রাতের খাবার খেতে হয় বেশ দেরিতে— কখনও কখনও রাত ১২টার পরেও। অথচ চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদরা বলছেন, এই অভ্যাসই নীরবে বাড়িয়ে দিচ্ছে ওজন এবং নানা জটিল রোগের ঝুঁকি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়ন্ত্রণহীন ওজন এখন এক নতুন ‘অতিমারী’। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, বাংলাদেশেও স্থূলতার হার দ্রুত বাড়ছে। অতিরিক্ত ওজন কেবল বাহ্যিক সৌন্দর্যহানিই নয়, এটি ডায়াবেটিস, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এমনকি ক্যানসারেরও ঝুঁকি বাড়ায়।
‘ওজন কমাতে সূর্যকে অনুসরণ করুন’
আমেরিকান পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসক অ্যাসলে লুকাস বলেন,
“দেহের নিজস্ব ঘড়ির সঙ্গে মিল রেখে খাবার খেলে বিপাকহারে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে।”
তার মতে, ওজন কমাতে চাইলে সূর্যকে অনুসরণ করতে হবে। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। রাতের খাবারের আদর্শ সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে। এতে শরীরের মেটাবলিজম সক্রিয় থাকে এবং রাতের খাবার ও সকালের নাশতার মধ্যে অন্তত ১২ ঘণ্টার ব্যবধান বজায় রাখা যায়, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
সন্ধ্যা ৭টার আগে রাতের খাবার শেষ করার উপকারিতা
১. হজম শক্তি বৃদ্ধি
সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নিলে শরীরের কাছে হজমের জন্য পর্যাপ্ত সময় থাকে। এতে অজীর্ণতা, গ্যাস ও বুক জ্বালার সমস্যা কমে যায়।
২. রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ
রাতের খাবার তাড়াতাড়ি শেষ করলে ইনসুলিনের মাত্রা স্থিতিশীল থাকে। এতে রক্তে শর্করার ওঠানামা কম হয় এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৩. বিপাক হার বৃদ্ধি
খাবার তাড়াতাড়ি গ্রহণ করলে শরীরের বিপাকহার উন্নত হয়, যা ওজন নিয়ন্ত্রণ ও ফ্যাট বার্নিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশের পুষ্টিবিদদের মতেও সময়টাই মূল চাবিকাঠি
দেশের পুষ্টিবিদরাও বলছেন, রাতের খাবার দেরিতে খাওয়ার প্রবণতা এখন শহুরে জীবনের বড় সমস্যা। রাতে খাওয়ার পরপরই ঘুমিয়ে পড়লে শরীরের বিপাকক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। ফলে বাড়তি ক্যালরি চর্বি হিসেবে জমে ওজন বাড়ায়।
তাই ব্যস্ত জীবনযাপনেও চেষ্টা করুন রাত ৭টার মধ্যেই খাবার শেষ করতে। এতে ওজন যেমন নিয়ন্ত্রণে থাকবে, তেমনি ঘুমও হবে গভীর ও প্রশান্তিময়।
সূত্র: এই সময় অনলাইন